ইসলামিক ফ্রন্ট ঢাকা নগর’র বাজেট পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিতঃ ছয় দফা দাবি উত্থাপন
বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ ঘোষণা পরবর্তী ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পরিষদ এর বাজেট পর্যালোচনা সভা আজ ০৯ জুন ২০২১ বুধবার দুপুর ২টায় পুরানা পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী নকশেবন্দী। বাজেট পর্যালোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মুহাম্মদ শাহীদ রিজভী, দপ্তর সম্পাদক এম এম নাঈম উদ্দীন, ইসলামী ছাত্রসেনা সহ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ আরিফ আল আবেদী, ইসলামী ছাত্রসেনা ঢাকা মহানগর নেতা মুহাম্মদ আবেদ শাহ উজ্জ্বল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতা মুহাম্মদ এম.এ আব্বাস প্রমুখ। এতে নেতৃবৃন্দ জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা করে নিম্নোক্ত ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন।
* বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের উপর ১৫% ভ্যাট আরোপ বিশ্ববিদ্যালয় মালিকদের আয়ে প্রভাব না ফেলে সরাসরি কর্মহীন ও উপার্জনহীন শিক্ষার্থীদের উপর প্রভাব ফেলে উচ্চশিক্ষাকে ব্যাহত করবে, যা জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়ার শামিল। তাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীদের উপর ১৫% ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে।
* জনগুরুত্বপূর্ণ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠা আর্থিক সেবা ‘মুঠোফোনে নগদ অর্থ লেনদেন’-এ কর্পোরেট কর আরোপ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও এলিট শ্রেণীর উপর না হয়ে সরাসরি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপর বিরুপ প্রভাব ফেলবে। তাই এই তথাকথিত কর্পোরেট কর প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে হবে।
* উচ্চবিত্তের ব্যবহার্য ব্যক্তিগত গাড়ীর উপর করারোপ সঠিক হলেও গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা নাই। সুতরাং গণপরিবহন ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি ঘটাতে হবে।
* প্রায় ৮৫ হাজার টাকা মাথাপিছু ঋণের বোঝা চাপিয়ে জাতিকে ন্যুব্জ করে দেয়া হয়েছে যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কর্মহীন ও বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত। করোনা মহামারি কালে মানুষ ক্ষুধার যন্ত্রণায় ভুগলেও মানুষের কল্যাণে বেকারত্ব দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও টিসিবির খাদ্য ও ভোগ্যপণ্য বিক্রির হার বাড়িয়ে সহজলভ্য করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ভর্তুকি দিয়ে জনকল্যাণে ও নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
* একটি সুখী সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ধর্ম ও নৈতিক জাতিগঠনের বিকল্প নেই। ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর সহাবস্থান বাংলাদেশ এর ঐতিহ্য। এদেশে বরাবরের মতোই মসজিদের খতীব ইমাম মুয়াজ্জিন ও খাদেমরা চরম অবহেলিত রয়ে গেছেন। তাই খতীব ইমাম মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের ন্যুনতম বেতন স্কেলের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিতে বাজেটে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দিতে হবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মীয় গুরুদেরও থোক বরাদ্দের ব্যবস্থা রাখা যায়।
* করোনাকালীন সময়ে সরকারের আপাতদৃষ্টিতে আন্তরিকতা দেখা গেলেও স্বাস্থ্যখাতে তীব্র নৈরাজ্য পরিদৃষ্ট হয়েছে। অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি ও নৈরাজ্য দূরীকরণে স্পষ্টতা নেই। অর্থমন্ত্রী কর্তৃক করোনা মোকাবেলায় ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব প্রশংসনীয়। তাই বিদেশ হতে টিকা আমদানিতে মধ্যস্বত্বভোগীদের একচেটিয়া বাজার দখলের সুযোগ রহিত করে সরকারকে সরাসরি টিকা সংগ্রহ করে করোনা মহামারি মোকাবেলায় দ্রুত দেশের সকল মানুষকে টিকাদান করতে হবে।
পরিশেষে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত প্রস্তাবনা শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে মর্মে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক সভাপতির সমাপনী ভাষণ ও মুনাজাতের মধ্য দিয়ে বাজেট পর্যালোচনা সভা শেষ হয়।
[related_post themes="flat" id="1625"]