খবরের বিস্তারিত...


ফ্রান্সের ইসলাম বিদ্বেষী মনোবৃত্তি বিশ্বব্যাপী জাতিগত সংঘাত ও হানাহানি ছড়িয়ে দেবে –আল্লামা জুবাইর

অক্টো. 27, 2020 সাংগঠনিক খবর

ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ’র মাননীয় মহাসচিব ও বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য খ্যাতিমান ইসলামিক স্কলার মোফাচ্ছেরে কোরআন শাইখুল হাদিস অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর(মঃজিঃআ) বলেছেন- ফ্রান্সে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (দঃ) কে নিয়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় বিরতিহীনভাবে ব্যাঙ্গ চিত্র প্রদর্শনের ন্যাক্কারজনক ঘটনাকে ইতিহাসের জঘন্য বর্বরতা বলে উল্লেখ করেন। ফ্রান্সে মুসলমানদের বিরুদ্ধে এহেন জাতিগত নিপীড়ন বিচ্ছিন্ন কিছু নয়, বরং তা এদের চিরায়ত মুসলিম বিদ্বেষি মনোবৃত্তিরই বহিঃপ্রকাশ। এরা মুসলমানদের বিচ্ছিন্নতাবাদি তথা জঙ্গি তকমা দিয়ে বিশ্ব পরিমন্ডলে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠি হিসেবে চিত্রিত করতে চায়। ফ্রান্স সরকার কর্তৃক সাময়িকভাবে মসজিদ বন্ধ করে দেয়া, মসজিদে পুলিশি অভিযান পরিচালনা, সর্বোপরি কোন ইসলামিস্টকে শান্তিতে ঘুমাতে না দেয়ার মত ঔদ্ধ্যত্য প্রত্যক্ষ মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

একটি সভ্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে এহেন প্রতিক্রিয়াশীল আচরন কখনও কাম্য হতে পার না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন-এহেন জঘন্য কর্মকান্ড কেবল মুসলিম ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানবে তা নয়, বরং বিশ্বব্যাপী জাতিগত সংঘাত ও হানাহানি ছড়িয়ে পড়বে। তাবৎ বিশ্ব জাহানের নবী (দঃ) এর এহেন অপমানে মুসলমানদের হৃদয়ের রক্তক্ষরন কোনভাবেই থামছে না। তিনি এহেন নির্মমতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও ফ্রান্সের পণ্য বর্জন সহ সকল মুসলিম রাষ্ট্রকে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করারও আহবান জানান। পাশাপাশি অবিলম্বে ফ্রান্সে মুসলিম নির্যাতন বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা সহ বাংলাদেশ সরকারকে কুটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে ফ্রান্সের এ মুসলিম বিদ্বেষী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে দায়িত্বশীল ভূমিকায় এগিয়ে আসার জন্যও উদাত্ত আহবান জানান। তিনি আরও বলেন,- রাসুলুল্লাহ(সা.)গোত্রীয় শাসনের স্বৈরাচারে দগ্ধ, মুষ্টিমেয় বিত্তশালীর শোষণে নিঃস্ব, সামাজিক দূরাচারে অতিষ্ঠ মানুষের মুক্তির মাধ্যমে একটি সুস্থ, সুন্দর, স্থিতিশীল ও মানবিক মূল্যবোধের সমাজ প্রতিষ্ঠার ধারক। তিনি বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে তাওহিদের বাণী প্রচারের দায়ে স্বজাতির নির্যাতনে নিরুপায় হয়ে জন্মভূমি ছেড়ে মদিনায় হিজরতে বাধ্য হয়েছিলেন। অতঃপর ঐতিহাসিক মদিনা সনদ প্রণয়নের মাধ্যমে ইহুদি, পৌত্তলিক, খ্রিস্টান ও মুসলমানদের নিয়ে মদিনাতে একটি স্বাধীন-স্বতন্ত্র জাতি ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ইসলাম অন্য ধর্মের প্রতি কোনপ্রকার কটাক্ষকে কস্মিনকালেও সমর্থন করে না। যেথায় অবাঞ্ছিত সামপ্রদায়িকতা একেবারেই পরিত্যাজ্য। কেননা আল্লাহ প্রিয় নবী (দঃ) কে জাতি,ধর্ম, বর্ণ,গোত্র,সম্প্রদায় নির্বিশেষে তাবৎ দুনিয়ার কল্যাণ স্বরূপ প্রেরিত হয়েছেন। তাই বিশ্বব্যাপী ইসলামী পূণর্জাগরণই হোক এবারকার ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর মূল প্রতিপাদ্য।
বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআ’ত চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে অদ্য ২৭ অক্টোবর ২০২০ রোজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় দামপাড়া জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উপলক্ষে অনুষ্ঠিত জশনে জুলুছপূর্ব এক সমাবেশে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত চট্টগ্রাম মহানগর সহসভাপতি বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন অধ্যক্ষ কাজী মাওলানা আব্দুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ আল্লামা এস এম ফরিদ উদ্দীন, আন্জুমানে খুদ্দামুল মুসলেমীন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাওলানা কাজী জসীম উদ্দীন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব এম সোলায়মান ফরিদ, যুগ্ন মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা কাজী আনোয়ারুল ইসলাম খান, যুগ্ন মহাসচিব আলহাজ্ব এস এম সিরাজ উদ্দীন তৈয়বী, শায়খুল হাদিস আল্লামা এনামুল হক সিকদার।ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর চট্টগ্রাম নগর সভাপতি আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর।
বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ছৈয়দ হাফেজ আহমদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আখতারী, অধ্যক্ষ মাওলানা ছৈয়দ জসিম উদ্দীন তৈয়বী, দক্ষিন স ম শহিদুল হক ফারুকী, মাওলানা আইয়ুব বদরী, এস এম আব্দুল করিম তারেক, মাওলানা রফিকুল ইসলাম নেজামী, মাওলানা নাছির উদ্দিন আল বারী, মাওলানা আনিসুর রহমান, মাওলানা নাছির উদ্দিন আনোয়ারী, আলহাজ্ব এ এম মঈনউদ্দীন চৌধুরী হালিম, মাওলানা নিজাম উদ্দীন আলকাদেরী, মাওলানা মোজাম্মেল হোসাইন, এডভোকেট ফেরদৌস আলম সেলিম, মাওলানা মহিউদ্দীন নক্সবন্দি, মাওলানা মাসুদ করিম চৌধুরী, মাওলানা মোজাম্মেল হক কাদেরী, মাওলানা জিয়াউল হক বিপ্লবী, ছাত্রনেতা এস এম আবু সাদেক ছিটু, কাজী সোলতান আহমদ, মোহাম্মদ মনির উদ্দীন
প্রমূখ। সমাবেশ শেষে এক বিশাল বর্ণাঢ্য জুলুছ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন করে পূনরায় জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে এসে মিলাদ কিয়াম ও আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে। উল্লেখ্য যে, জুলুছে অসংখ্য নবীপ্রেমিক এর নারায়ে তাকবীর ও নারায়ে রেসালতের ধ্বনীতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে উঠে।
কালেমা তৈয়বা ও কালেমা শাহাদাত খচিত বিভিন্ন পতাকা-ফেস্টুন জুলুছে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। যেথায় ধর্মানুরাগী মানুষদের শরবত পান করা সহ জুলুসে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করতেও দেখা যায়। সর্বোপরি গোটা জুলুছ জুড়েই এক জান্নাতী আবহের সৃষ্টি হয়। জুলুছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশও ইসলামী ছাত্রসেনার নেতা-কর্মী ছাড়াও অসংখ্য নবী প্রেমিক মুসলমান অংশগ্রহণ করেন।

[related_post themes="flat" id="1491"]