খবরের বিস্তারিত...


জেগে উঠুন চট্টলার সুন্নী জনতা

সেপ্টে. 02, 2020 নির্বাচিত নিবন্ধ

আহলান সাহলান আওলাদে রসুল (দঃ) আল্লামা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী।

বড়ই এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে চট্টলার তাবৎ সুন্নী জনতা। চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে
চট্টগ্রামের সুন্নী অঙ্গনের সর্বত্র। সুন্নী আলেম- ওলামাদের পারস্পরিক কাঁদা ছোড়াছুড়ি ক্রমাগত তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করেছে। একে- অপরের বিরুদ্ধে উলঙ্গ সমালোচনা এখন এদের নিত্য কর্মে পরিণত হয়েছে । ময়দানে অব্যাহত রেখেছে পরস্পর বিরোধী অযাচিত বিষোদগার ও কুৎসা রটনা। এছাড়াও চলছে একে অপরকে ঘায়েলের ঘৃণ্য চেষ্টা। শুধু তাই নয়- এখন প্রকাশ্য দিবালোকে হাতাহাতি- মারামারিতেও লিপ্ত হয়ে পড়েছে এরা। তাতেই কি শেষ? মোটেও না। রাজপথে চলমান রেখেছে পরস্পর বিরোধী সভা-সমাবেশ, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, মিছিল- মানববন্ধন, স্মারকলিপি-সংবাদ সম্মেলনের মত ইত্যাকার প্রতিবাদী কর্মসূচি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তো প্রায় প্রতিদিনই দৃশ্যমান হয়ে থাকে একেকজনের লাইভ ভিডিও। বিরতিহীনভাবে চলতে থাকে একেকজনের প্রায় দুই ঘন্টার মত সিরিজ ড্রামা। একে অন্যের ছিদ্রান্বেষন করাই এসব ভিডিওর মূল প্রতিপাদ্য। হাসি, তামাশা ও কমেডিতে ভরপুর এসব সিরিজ। দর্শকপ্রিয়তারও ঘাটতি নেই এসব ড্রামা সিরিজের। একটি চিহ্নিত মহল তো তীর্থের কাকের ন্যায় অপেক্ষমান থাকে এসব দেখতে। এসবের কারণে সুন্নী ঘরনায় তুষের আগুন জ্বললেও বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে বাতিলরা। এরা অতীব তুষ্ট চিত্তে এনজয় করছে এসব ড্রামা সিরিজ। যাইহোক, এসবের মধ্যদিয়ে এসব আলেমরা নিজেকে একজন স্কলার হিসেবে প্রমাণের প্রাণান্তকর চেষ্টা করে। অথচ এদের বালখিল্যতাসমৃদ্ধ ও দাম্ভিক আচরণে নিজের অজান্তেই ফুটে উঠে জ্ঞানের দৈন্যতার দূর্বল চিত্র। প্রকাশ হয়ে পড়ে এদের কুৎসিত হৃদয়টা। এদের হিংসাত্মক ম্যারাথন বক্তব্যে মাজহাব- মিল্লাত কোথায় গিয়ে ঠেকছে সেদিকে তো ভ্রুক্ষেপই করেন না বরং এদের পুরো অবয়বে প্রতিবিম্বিত হয় দিগবিজয়ী আনন্দ। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এদের গোটা আলোচনা জুড়েই নির্দ্বিধায় ফুটে উঠে আত্ন স্বার্থের নোংরা বিষয়টি। একটি বারের জন্যও এরা ভাবেন না যে, দেশ ও জাতির প্রতি রয়েছে তাদের “গ্রেট কমিটমেন্ট”। স্বার্থের অন্ধকার গলিতে বিচরণ করতে গিয়ে এরা বেমালুম ভুলে গিয়েছেন এদের প্রদত্ত কমিটমেন্ট এর কথা। এসব স্বার্থান্ধ আলেমদের কারণে মাজহাব-মিল্লাত, সুন্নীয়ত অাজ ক্ষত-বিক্ষত। সুন্নীয়তের প্রতি নেই কোন এদের দরদ ও মমত্ববোধ। যেজন্য ময়দানে দৃশ্যমান প্রায় ডজন খানেক আহলে সুন্নাত কমিটির অস্হিত্ব। এরা চায়ের টেবিলে রাগারাগি করেও আহলে সুন্নাতের কমিটি ঘোষনা করে। সুতরাং এসব কমিটি কস্মিনকালেও গণ আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম নয়। সত্যিকার অর্থে এগুলোর উত্থান যেমনিভাবে, পতনও হবে ঠিক তেমনিভাবে। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী,গঠনমূলক ও গণকল্যাণমূখী কিছু কর্মসূচি নিয়ে ময়দানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত। যার নিবন্ধন নং-ঢ ০২৫১২/১৯৯০। যেটি বর্ণাঢ্য এক ঐতিহ্যের ধারক। নিখিল ভারত বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত নামে যেটির পথচলা শুরু। যেটির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন আওলাদে রসুল (দঃ) রাহনুমায়ে শরিয়ত ও তরিকত পীরে কামেল হাফেজুল হাদিস হযরতুলহাজ্ব আল্লামা ছৈয়দ আবেদ শাহ মোজাদ্দেদী আল মাদানী (রঃ)। যেটির মাধ্যমে তিনি ইসলামের মূলধারা সুন্নীয়ত এর সম্প্রসারণ ও বিস্তৃতিতে অনন্যসাধারণ অবদান রেখেছেন। যা সুন্নীয়তের ইতিহাসে অদ্যাবধি দেদীপ্যমান রয়েছে।

বর্তমানে এটির নেতৃত্বে রয়েছেন, তাঁরই যোগ্য উত্তরসূরি, দেশের একজন বহুল পরিচিত মুখ, বরেণ্য ইসলামিক স্কলার,তাবৎ সুন্নী জনতার অকৃত্রিম বন্ধু, অাওলাদে রসুল (দঃ), পীরে কামেল হযরতুলহাজ্ব আল্লামা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী। নির্লোভ-নিরহংকার এ মহান ব্যক্তিত্ব নিজেকে একমাত্র সুন্নীয়তের জন্যই উৎসর্গ করেছেন। যিনি অসংখ্য পার্থিব সুযোগ- সুবিধার হাতছানিকে তাচ্ছিল্য করে মাজহাব-মিল্লাতের জন্য অহর্নিশ ভুমিকা রেখে চলেছেন। যাঁর যোগ্যতা- দক্ষতা কষ্টিপাথরে পরিক্ষিত। নবী (দঃ) আদর্শের ধারক এ মহান ব্যক্তিত্বই হচ্ছেন সর্বমহলে সমাদৃত ও সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য। যিনি সর্বপ্রকার অবাঞ্ছিত বিতর্কের উর্ধ্বে। সুন্নীয়তের এহেন ক্রান্তিকালে তিনিই হতে পারেন একমাত্র আইডল। যাঁর কাছেই আপন সন্তানের মত নিরাপদ থাকবে সুন্নীয়ত। অতএব জেগে উঠুন, চট্টলার সুন্নী জনতা এবং আসুন, সর্বপ্রকার ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ইস্পাত কঠিন শপথে পারস্পরিক ঐক্যের দুর্ভেদ্য প্রাচীর গড়ে তোলার মাধ্যমে আওলাদে রাসুল (দঃ) আল্লামা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ এর নেতৃত্বে এগিয়ে যায়। তবেই সুন্নীয়তের অভিষ্ট লক্ষ্য স্পর্শ করা অধিকতর সম্ভব। অগামী ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং বার আউলিয়ার স্মৃতি বিজড়িত পূণ্যভূমি চট্টগ্রাম সফরে আসছেন বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত সভাপতি পীরে কামেল, রাহবারে শরিয়ত হযরতুলহাজ্ব আল্লামা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী। ইতোমধ্যে তাঁর আগমনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম জুড়ে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের বন্যা। চট্টগ্রামের সর্বত্র চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। তাঁকে বরণ করতে মূখিয়ে আছে চট্টলার তাবৎ সুন্নী কমিউনিটি। তাঁর সফরের মেয়াদকাল হবে ৪ দিন। তিনি খুবই ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করবেন এ সময়টুকুন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন দরবার জিয়ারত সহ দরবারের সাজ্জাদানসীন, সুন্নী পীর-মাশায়েখ এবং আলেম-ওলামাদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হবেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত চট্টগ্রাম উত্তর,দক্ষিণ মহানগর কর্তৃক আয়োজিত আহলে সুন্নাত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন।

লেখক: এম.ইব্রাহিম আখতারী
বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক।

[related_post themes="flat" id="1450"]