
চাই বিশ্ব জনমত-“রোহিঙ্গাদের বাঁচতে দাও, নিজদেশে ফিরিয়ে নাও” ঃ শাহীদ রিজভী
আমাদের আরো জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বাংলাদেশ নিজ সামর্থ্যের চেয়ে বেশি করেছে ও করে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষীয় হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা ৪লাখ বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি। যে মানবিক বিপর্যয় চলছে তা বাংলাদেশ সরকার এর পক্ষে একাকী সমাধান করা সম্ভব নয়।
দুঃস্থদের পাশে দাঁড়াতে এ মুহুর্তে সারা বিশ্ব এগিয়ে আসতে বৃহৎ আঙ্গিকে সচেতনতা জাগানো দরকার। তুরষ্ক সবার আগে এ ইস্যুতে এগিয়ে এসেছে। এরপর দেখা যায় কুয়েত ও ইউ. এ. ই মুখ খুলেছে। সৌদিরা হাজ্বীদের টাকা খেয়ে এখনো দিব্যি আরামে ঘুমুচ্ছে। কিন্তু মালদ্বীপ এর মতো মুসলমান অধ্যুষিত একটা ছোট্ট দেশ মায়ানমারের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়ে সাহসিকতার সাথে মানবতাকে উর্ধে তুলে ধরেছে। এদিকে জাতিসংঘ স্বীকার করে নিতে বাধ্য হলো মায়ানমারের সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করতে ethnic cleansing শুরু করেছে। কাজাখাস্তানে ওআইসি’র চলমান বৈঠকে তুরস্ক সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে জেগে উঠার ডাক দিয়েছে। চেচনিয়াও ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া যদি রোহিঙ্গা ইস্যুতে বর্মী মগদের পক্ষে থাকে তো তাহলে চেচনিয়া রাশিয়ার পাশে থাকবে না।
তুরস্ক primarily ১ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা পাঠিয়েছে। আরো ৯ হাজার মেট্রিক টন আসার পথে। একদম না দিলেও আমাদের দাবি করার মতো কিছু ছিলো না। কারণ আমাদের প্রতিবেশী দাদা বাবু ভারত মায়ানমারের পক্ষে সরাসরি ও মুসলমান ভাই পাকিস্তান রহস্যজনক নীরবতা পালন করছে। সে অবস্থায় তুরস্ক যা করেছে তা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কৃতজ্ঞতার সাথে মূল্যায়ন করতে হবে।
তুরস্ক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আশ্রয় ক্যাম্প বানাতে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা দেয়ার কথা বলছে। কারণ এ মুহুর্তে লক্ষ লক্ষ আদম সন্তান খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এখনই শরণার্থীদের জন্য আশ্রয় ক্যাম্প তৈরি করা না গেলে হাজার হাজার শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে পড়বে। সাময়িক আশ্রয় দেয়ার জন্য এর কোন বিকল্প নেই। সরকার এর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংগঠন শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ধীরস্থির চিত্তে বুদ্ধি ও উদারতার পরিচয় দিয়ে কূটনৈতিক উপায়ে সমাধানে অগ্রসর হচ্ছে। জনসংখ্যার ভারে ন্যুব্জ বাংলাদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে স্থায়ীভাবে দেখতে চাই না। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিয়ে তাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে বাংলাদেশকে বিশ্ব জনমত গঠনে উদ্যোগ নিতে হবে।
-অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহীদ রিজভী, অর্থ সম্পাদক, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ