খবরের বিস্তারিত...


লালদীঘিতে ইসলামিক ফ্রন্টের জনসভায় প্রতিবাদী জনতার ঢল ও নগরীতে সুন্নী জনতার গণমিছিল

ফেব্রু. 04, 2017 সাংগঠনিক খবর

বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের কেন্দ্রীয় মহাসচিব হযরতুলহাজ্ব আল্লামা শাইখ খোন্দকার গোলাম মাওলা নক্সবন্দী বলেছেন,- ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম। কোনপ্রকার সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদী কর্মকান্ডের সাথে ইসলামের দূরতম সম্পর্ক নেই। ইসলামের নামে যেসব বিপথগামী যুবক জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়েছে, এরা কখনও মুসলিম হতে পারে না। এরা দেশদ্রোহী অপশক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নে অন্ধকার জগতের পথযাত্রী হয়েছে। এদেশকে একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করাই এদের এ সুদুরপ্রসারী মিশন। এজন্য এরা দেশব্যাপী খুন, হত্যা, অপহরণ, নাশকতা, বোমাবাজী, চোরাগুপ্তা হামলা অব্যাহত রেখেছে। দেশের স্থিতিশীলতা বিধ্বংসী কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে ওহাবী, মওদুদী ও সালাফীদের অনুসারীরাই এদের পৃষ্ঠপোষক বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন,- সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের দেশে মানুষের ধর্মানুরাগ থাকা দোষের নয়। তবে ধর্মান্ধ হওয়াটা মোটেও বাঞ্চনীয় হতে পারে না। এদেশের মানুষের মধ্যে সাম্য-মৈত্রী, সৌহার্দ্যবোধ তথা পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের যে অটুট সেতুবন্ধন রয়েছে, যা শুধু দেশে নয়, সমগ্র বিশ্বব্যাপী সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, দুষ্টচক্র সময়ে-অসময়ে, কারণে-অকারণে এদেশে শিশাঢালা প্রাচীরের ন্যায় প্রতিষ্ঠিত সম্প্রীতি বিনষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। অতএব, এ অপশক্তির দৌরাত্ম্য প্রতিরোধে দেশের আলেম-ওলামা, হক্কানী-রব্বানী পীর-মাশায়েখ, সুশীল সমাজ, পেশাজীবি সহ সকলের সম্মিলিত ঐক্য গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। ইসলামিক ফ্রন্টের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আবু নাছের তালুকদার বলেছেন,- বিগত ২১ জানুয়ারী ১৭ইং হাটহাজারীতে দেশের বরেণ্য আলেমেদ্বীন ইসলামিক ফ্রন্ট এর মহাসচিব আল্লামা জুবাইরের গাড়ী বহরে হামলার সাথে জঙ্গীবাদী অপশক্তির সাদৃশ্য খুঁেজ পাওয়া যায়। কেননা ইতোপূর্বে বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আল্লামা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যাকান্ড, শোলাকিয়া ঈদ জামায়াত ও গুলশানস্থ আশিয়ান সিটি ট্র্যাজেডির মধ্য দিয়ে এ অপশক্তি ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের ব্যর্থ প্রয়াস চালায়। কিন্তু এদেশের সচেতন মানুষের দেশপ্রেমের নিকট সকল প্রকার চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র অসহায়ভাবে পরাজিত হতে বাধ্য হয়। ভবিষ্যতেও দেশ ও ধর্ম বিরোধী সর্বপ্রকার ষড়যন্ত্র এদেশের জনগণ নস্যাৎ করে দেবে বলে মন্তব্য করে তিনি জঙ্গীবাদী কর্মকান্ড পরিহার করে সুস্থধারায় ফিরে আসার জন্য এসব বিপথগামীদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের শীর্ষ আলেম অধ্যক্ষ আল্লামা এস এম ফরিদ উদ্দিন বলেছেন,-একজন দেশখ্যাত আলেমেদ্বীনের উপর এ ন্যাক্কারজনক হামলা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কেননা এধরণের একজন আলেমের যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের জানমাল তো একেবারেই অনিরাপদ। ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম সোলায়মান ফরিদ বলেছেন,- দুর্বৃত্তরা আল্লামা জুবাইরকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যেই এ নৃশংস হামলা চালিয়েছে। মাথায় টুপি ও মুখে দাড়ি রেখে ইসলামী লেবাসে এধরণের গর্হিত কাজ কখনও প্রত্যাশিত হতে পারে না। এরা দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসী। এসব অর্বাচীনদের কোন দল কিংবা ধর্ম নেই। কেননা ইসলাম ধর্ম কখনও সহিংসতা, নাশকতা ও চোরাগুপ্তা হামলাকে সমর্থন করে না। তাবৎ দুনিয়ায় ইসলামের শ্বাশতঃ ও কালজয়ী আদর্শই একমাত্র প্রতিষ্ঠিত সত্য। আদর্শিক মোকাবিলায় পরাজিত হয়ে যারা ইসলামী আবরণে সন্ত্রাসের পথ বেঁেচ নিয়েছে এরা ইসলাম ও মুসলমানের শত্রু। এরা জঙ্গীবাদীদের দোসর। ইসলামিক ফ্রন্ট এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা কাজী আনোয়ারুল ইসলাম খান বলেছেন,- আল্লামা জুবাইরের উপর এহেন বিভৎস ঘটনার প্রায় ১৫দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও কোন সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার না হওয়া খুবই দুঃখজনক। এতে প্রশাসনের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার সংকট তৈরী হওয়া নিতান্তই স্বাভাবিক। তাই অবিলম্বে আল্লামা জুবাইরের গাড়ী বহরে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে প্রশাসনিক স্বচ্ছতার প্রমান দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি তিনি জোর দাবী জানান। অন্যথায় সন্ত্রাস ও অপরাধ প্রবণতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি সমুহ আশংকা প্রকাশ করেন। চট্টগ্রাম নগর ইসলামিক ফ্রন্ট এর সভাপতি আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর বলেছেন,-একথা অনস্বীকার্য যে, কোন অপরাধী বিনা বিচারে পার পেয়ে গেলে অপরাধ প্রবনতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। আল্লামা জুবাইরের উপর এধরণের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় খুবই উদ্বিগ্ন তাবৎ সুন্নী কমিউনিটি। কেননা এর আগেও দেশের শীর্ষ ১০জন আলেমদের বিরুদ্ধে জঙ্গী হুমকির মধ্যেও তিনি ছিলেন অন্যতম একজন। এছাড়াও ২০০৬ সালে ০৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে রাজধানী ঢাকার পান্থপথেও তাঁর উপর দুর্বৃত্তের হামলার ঘটনা ঘটেছিল। আল্লামা জুবাইর এর উপর হামলাকারীরা এখনও অধরা থাকায় তিনি গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কোন আলেম আক্রান্ত হওয়া মানেই দুনিয়ার সকল আলেম সমাজেরই অপমান। সুতরাং আল্লামা জুবাইরের উপর এ জঘন্য হামলা সকল আলেম সমাজের জন্য অশনি সংকেত।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে অদ্য ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ইং রোজ শনিবার বিকেল ০২টায় ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে দেশব্যাপী অভিশপ্ত জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনমত গঠন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা জুবাইরের গাড়ী বহরে দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে এবং কোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক সুস্থ সমাজ বিনির্মাণের দৃঢ় অঙ্গীকারে অনুষ্ঠিত বিশাল জনসভায় বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন। ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,- বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর হযরতুলহাজ্ব আল্লামা শাইখ খন্দকার গোলাম মাওলা নক্সবন্দী। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আবু নাছের তালুকদার, পীরে তরিকত হযরতুলহাজ্ব আল্লামা শাহসূফী ছৈয়দ নাছেরুল হক চিশতী, আল্লামা অধ্যক্ষ এস এম ফরিদ উদ্দিন,¡ আল্লামা কাজী জসিম উদ্দিন, দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম সোলায়মান ফরিদ, যুগ্ম মহাসচিব¡ অধ্যক্ষ আল্লামা কাজী আনোয়ারুল ইসলাম খান, আল্লামা হাফেজ আমিন, অধ্যাপক আ মা ম মুবিন, আলহাজ্ব এস এম সিরাজ উদ্দিন তৈয়বী, দক্ষিণ জেলার সভাপতি স ম হামেদ হোসাইন, মাওলানা সালেহ আহমদ আনসারী, পীরজাদা এরশাদুল্লাহ রজায়ী, পীরজাদা শামসুদ্দিন জামাল উল্লাহ হাবিবী, অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আখতারী, এস এম আবদুল করিম তারেক, অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন তৈয়বী, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন,- জনসভা প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ছৈয়দ হাফেজ আহমদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন,- জনসভা প্রস্তুতি কমিটির সচিব এম মহিউল আলম চৌধুরী। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,- অধ্যক্ষ আইয়ুব বদরী, আবদুর রহমান মান্না, মাওলানা রফিকুল ইসলাম তাহেরী, স ম শহিদুল হক ফারুকী, কে এম নুরুল ইসলাম হোলাইনী, মাওলানা জয়নাল আবেদীন জিহাদী, স ম শওকত আজিজ, মাওলানা মমতাজুল হক হোসাইনী, শাহজাদা জহির উদ্দিন লতিফী, কাজী সুলতান আহমদ, খ ম জামাল উদ্দিন, নুরুল আবছার কফিল, জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

Comments

comments