মানব পাচারের মত ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে : ইসলামিক ফ্রন্ট
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জননেতা অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার উপকূলে কয়েক হাজার বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা উদ্ধারের ঘটনাকে মানবিক বিপর্যয় হিসেবে অভিহিত করে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, বৈধ পথ বন্ধ থাকায় মফস্বল ও অনগ্রসর এলাকার সহজ-সরল মানুষেরা জীবিকার সন্ধানে সাগর পথে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে পাড়ি জমাচ্ছে। দালালদের খপ্পরে পড়ে এ সমস্ত নিরীহ মানুষ নৌ পথে স্বপ্নের এ সকল দেশে গেলেও কোনভাবেই তারা সে দেশে প্রবেশ করতে না পেরে মাসের পর মাস সমুদ্রের মধ্যেই তাদেরকে ভাসতে হচ্ছে। অনেকেই অনাহারে-অর্ধাহারে মৃত্যুবরণ করে সাগরেই হচ্ছে তাদের শেষ ঠিকানা।
আবার অনেকেই নিজেদের প্রস্রাব পান করে বেঁচে থেকে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। ভেসে-ভেসে এক দেশ থেকে অন্য দেশে ঘুরছে, কোথাও তাদের ভিড়তে দেয়া হচ্ছে না। উপরন্তু থাই জঙ্গলে বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গাদের গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। আবার কেউ সেখানে দাস-দাসী হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
এতদসত্ত্বেও মানব পাচার প্রতিরোধে প্রশাসনিকভাবে নামে মাত্র কিছু তৎপরতা ছাড়া বৃহদাকারের কোন অভিযান চোখে পড়ে না। মানব পাচারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকলেও মানব পাচারের মত ঘৃণ্য কাজ প্রতিরোধে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে এবং কোনভাবেই মানব পাচার থামছে না।
বরঞ্চ মানব পাচারকারী দালালরা দিব্যি এ জঘন্য ও ঘৃনিত কাজ অবলীলায় চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য যে, এদের মূল গডফাদারদের সাথে আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশেই এরা অধরায় থেকে যাচ্ছে বলে সংবাদ মাধ্যমে একাধিকবার প্রকাশিত হলেও সরকার এ ব্যাপারে কোন কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়াতে এটি বিশ্ববাসীর নিকট মানবিক বিপর্যয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ আর গরিব দেশ থাকবে না বলে সরকারের দ্ব্যর্থহীন ঘোষণার পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে এবং দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এ সকল দরিদ্র মানুষদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ইতিবাচক পদক্ষেপে এগিয়ে আসার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সচিব (চট্টগ্রাম বিভাগ) এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর বলেছেন,- ১৯৭৩ সালে ইন্ধিরা-মুজিব সীমান্ত চুক্তি বিলটি ভারত সরকার সংবিধান সংশোধন করে ৪০ বছর পর ভারতের লোকসভা অধিবেশনে পাস করার মাধ্যমে চুক্তিটি বাস্তবায়িত হওয়ায় উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এটি একটি বৃহত্তম কূটনৈতিক সফলতা বলে মন্তব্য করেন। তাছাড়া তিনি ভারতের সাথে বাংলাদেশের অমীমাংসিত তিস্তা চুক্তিসহ সকল দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানে দক্ষ কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে সক্রিয় ভূমিকায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য জোর দাবি জানান।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম দামপাড়া ইমাম ম্যানশনস্থ কার্যালয়ে বাঁশখালী থানা ইসলামিক ফ্রন্টের সাথে কেন্দ্রীয় ইসলামিক ফ্রন্টের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইসলামিক ফ্রন্টের সভাপতি বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন আল্লামা কাজী জসিম উদ্দীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামিক ফ্রন্টের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইসলামিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা স ম শহিদুল হক ফারুকী, দক্ষিণ জেলা ইসলামিক ফ্রন্টের অর্থ সম্পাদক মাস্টর জাহাঙ্গীর আলম, দক্ষিণ জেলা ইসলামিক ফ্রন্টের সদস্য মামুনুর রশিদ মামুন, মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন, বাঁশখালী থানা ইসলামিক ফ্রন্টের সভাপতি হাফেজ আহম্মদ, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শরিফ প্রমুখ।